অধ্যাপক ডাঃ আশরাফুন্নেসা ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে ১৯৮৩ সালে এমবিবিএস, ১৯৯৩ সালে ইংল্যান্ডের রয়েল কলেজ অফ অবস্ট্রিটিশিয়ান এন্ড গাইনোকোলজিস্ট থেকে এমআরসিওজি ও ২০১৪ সালে এফআরসিওজি ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। এছাড়া ২০০৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন।

১৯৮৩ সালের নভেম্বরে ঢাকা মেডিকেল কলেজে সহকারী সার্জন (ইন-সার্ভিস ট্রেইনি) হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। পরবর্তীতে জুলাই ’৮৬ থেকে জুলাই ’৮৮ পর্যন্ত অবস্ ও গাইনী বিভাগে সহকারী রেজিস্ট্রার ও রেজিস্ট্রার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর সিনিয়র হাউজ অফিসার হিসেবে ইংল্যান্ডের দ্যা লন্ডন হসপিটাল ও রচফোর্ড হসপিটালে জানু’৮৯ থেকে জুলাই’৯০ পর্যন্ত কাজ করেন। পরবর্তীতে আগস্ট’৯০ থেকে জানুয়ারী’৯৩ পর্যন্ত কুইন্স পার্ক হসপিটালে একই পদে অভিষিক্ত হন। ডিসেম্বর’৯৩ তে দেশে ফিরে তখনকার সময়ের ইনিস্টিটিউট অফ পোস্ট গ্র্যাজুয়েট মেডিসিন এন্ড রিসার্চ (আইপিজিএমআর) বর্তমানের বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএমইউ)-তে রেসিডেন্ট মেডিক্যাল অফিসার হিসেবে যোগদান করেন। বর্তমানে পদোন্নতি সকল ধাপ পেরিয়ে বিএমইউতে অধ্যাপক হিসেবে গাইনোকোলজিক্যাল অনকোলজি বিভাগে কর্মরত আছেন।

অধ্যাপক আশরাফুন্নেসা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক জার্নালে বহু গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশ করেছেন। তিনি বাংলাদেশে জরায়ু-মুখ ও স্তন ক্যান্সার স্ক্রিনিং কার্যক্রমের পুরোধা বলা যায়। ২০০৫ সালে বাংলাদেশ সরকার, ইউএনএফপিএ ও বিএমইউ মিলিত উদ্যোগে ভায়া (ভিজিউয়াল ইন্সপেকশন অফ সার্ভিক্স উইথ এ্যাসিটিক এসিড) নামক পাইলটিং প্রোগ্রামের ফোকাল পয়েন্ট ছিলেন। এই প্রোগ্রাম দেশের ১৬টি জেলায় পরিচালিত হয়। পাইলটিং প্রোগ্রামের সাফল্যের দরুন বাংলাদেশ সরকারের সরাসরি সহযোগিতায় দেশব্যাপী ৬৪ জেলার ২৫২ সেন্টার (সরকারী মেডিকেল কলেজ, জেলা হাসপাতাল, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স) এ স্যারাভাইকাল এন্ড ব্রেস্ট স্ক্রিনিং প্রোগ্রাম চালু হয়। পরবর্তীতে ভায়া স্ক্রিনিংকৃত রোগীদের উন্নততর সেবা প্রদানের লক্ষ্যে ২০১২ সালে সরকারের সহায়তায় বিএমইউতে একটি জাতীয় কেন্দ্র ও ১৪টি সরকারী মেডিকেল কলেজে কল্পোস্কপি ক্লিনিক চালু করার প্রকল্প গ্রহন করা হয়। বর্তমানে বিএমইউ’তে জাতীয় জরায়ু-মুখ ও স্তন ক্যান্সার স্ক্রিনিং ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি দেশের জরায়ু-মুখ ও স্তন ক্যান্সার স্ক্রিনিং এর কেন্দ্রবিন্দু। এই কেন্দ্রের প্রত্যক্ষ পর্যবেক্ষণ ও সহযোগিতায় দেশের বিভিন্ন সরকারী সেবা কেন্দ্র (মেডিকেল কলেজ, জেলা হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স) ৪৩টি কল্পোস্কপি ক্লিনিক চালু হয়েছে। এছাড়াও দেশব্যাপী ৬০১টি সরকারী/বেসরকারী সেবা কেন্দ্রে ভায়া ও সিবিই কার্যক্রম চলমান রয়েছে। বর্তমানে ২০৩০ সালের মধ্যে উদ্দিষ্ট জনগোষ্ঠিকে স্ক্রিনিং আওতায় নিয়ে আসার জন্য স্থানীয় পর্যায়ের কমিউনিটি ক্লিনিকে ভায়া ও সিবিই’র স্ক্রিনিং এর রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম চালু হয়েছে। এই বিশাল কর্মযজ্ঞের নেপথ্যের কারিগর হিসেবে তিনি প্রকল্প পরিচালক হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন। বর্তমানে এই প্রকল্প সরকারের এসডিজি প্ল্যানের অন্তর্ভুক্ত আছে।