বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় এর সুযোগ্য ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডাঃ মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী উপজেলার এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে ১৯৫৬ সালের ০৭ অক্টোবর জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মৃত আলহাজ্ব শামসুদ্দিন আহমেদ এবং মাতা আলহাজ্ব মোসাঃ হোসনে আরা বেগম।Preview Changes (opens in a new tab)
তিনি গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী জি. সি. পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৭২ সালে এসএসসি এবং ফরিদপুরের সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ থেকে ১৯৭৪ সালে এইচএসসি পাস করেন। তিনি বরিশালে অবস্থিত শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ থেকে ১৯৮২ সালে এমবিবিএস ডিগ্রি লাভ করেন। শারফুদ্দিন আহমেদ ১৯৮২ সালে সহকারী সার্জন হিসেবে সরকারি চাকরিতে যোগদান করেন। তিনি দেশের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে মেডিকেল অফিসার, রেসিডেন্ট সার্জন ও রেজিস্ট্রার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ১৯৯১ সালে সহকারী অধ্যাপক (চক্ষু) হন এবং ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত একই পদে নিয়োজিত ছিলেন। শারফুদ্দিন আহমেদ তৎকালীন ইনস্টিটিউট অব পোস্ট গ্রাজুয়েট মেডিসিন এন্ড রিসার্চ (বর্তমানে বিএসএমএমইউ) থেকে ১৯৮৫ সালে অফথালমোলজিতে ডিপ্লোমা এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০০৪ সালে একই বিষয়ে এমএস ডিগ্রি অর্জন করেন।
বিএসএমএমইউ-তে কমিউনিটি অফথালমোলজি বিভাগ চালু হলে তিনি নবপ্রতিষ্ঠিত বিভাগটির অধ্যাপক ও সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন। অধ্যাপনা ও চিকিৎসা সেবা প্রদানের পাশাপাশি শারফুদ্দিন বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি বিএসএমএমইউ এর সিন্ডিকেট ও একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্য, প্রিভেনটিভ এন্ড সোশ্যাল মেডিসিন অনুষদের ডিন এবং উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন। শারফুদ্দিন আহমেদ ২০২১ সালের ২৯ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।
শারফুদ্দিন আহমেদ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক জার্নালে শতাধিক গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশ করেছেন। তিনি বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় চক্ষু বিষয়ক ৫টি গ্রন্থের রচয়িতা। প্রায় ১০০ টি’র মত বিএমডিসি স্বীকৃত জাতীয় ও আর্ন্তজাতিক প্রকাশনা রয়েছে ২০১৩ থেকে ২০২১ পর্যন্ত। চোখের রোগসমূহের চিকিৎসা, প্রতিরোধসহ কমিউনিটি অফথালমোলজিতে অসামান্য অবদান রাখায় বিশিষ্ট চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ নেপালের রাজধানী কাঠমুণ্ডে সার্ক একাডেমি অফ অফথালমোলজির ১৪তম সম্মেলনে পিভিপি পুরস্কার লাভ করেন। তিনি ২৭তম APAO কংগ্রেস, বুসান, কোরিয়া ডিষ্টিংগুইসড সার্ভিস এ্যাওয়ার্ড ২০১২ অর্জন করেন। আন্তর্জাতিক সম্মাননার মধ্যে রয়েছে বিশিষ্ট পরিষেবা পুরস্কার, অন্ধত্ব প্রতিরোধ সম্মাননা, কমিউনিটি চক্ষুবিদ্যায় অসাধারণ কাজের জন্য পুরস্কার (এসএও) ২০১৮, স্বর্ণ পুরস্কার সিসিসি কলকাতা ২০১৯, এআইওসি অ্যাওয়ার্ড গুরুগ্রাম ২০২০।
ব্যক্তিজীবনে শারফুদ্দিন আহমেদ বিবাহিত। শহীদ সোহ্রাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের ডার্মাটোলজি বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক নাফিজা আহমেদ তার সহধর্মিণী। ব্যক্তিজীবনে তিনি তিন পুত্র সন্তানের জনক। তিন পুত্র সন্তান হলেন তাজবীর আহমেদ, তানভীর আহমেদ এবং তাহমিদ আহমেদ সাদাত।
ছাত্রজীবনে তিনি শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। শারফুদ্দিন বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের সক্রিয় সদস্য। ১৯৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধে বড় দুই ভাই মুক্তিযোদ্ধার সাথে তিনিও মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন করেন। ১৯৮৮ থেকে ১৯৯১ সালে দপ্তর সম্পাদক, কেন্দ্রীয় বিএমএ, ১৯৯২ থেকে ১৯৯৫ সালে সাংগঠনিক সম্পাদক, বিএমএ, ১৯৯৬ থেকে ২০০২ সালে কোষাধ্যক্ষ, ১৯৯৬ সালে ভোট ও ভাতের অধিকার আন্দোলনে কর্মকর্তা সমন্বয় পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। ১৯৯০ সালে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে তিনি সক্রিয় নেতা, ১৯৯৩ সালে সেন্ট্রাল স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ-এর প্রতিষ্ঠাতা যুগ্ম সম্পাদক ছিলেন। তিনি বর্তমানে কেন্দ্রীয় স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ এর ইসি সদস্য।